মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় রাতের আধাঁরে নিয়ম না মেনে বিদ্যালয় স্থানান্তর করায় এলাকাবাসী ক্ষোপ প্রকাশ করেছে। ফলে চর অঞ্চলের জন্য অনুমোদিত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত দুই দিন পুরাতন বিদ্যালয়ের তালাবদ্ধ কক্ষের সামনে আঙিনায় স্থানীয় শিক্ষকদের দিয়ে পাঠ্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান অভিভাবকরা।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পূর্বে নির্মিত টিনশেটের আঙিনায় পাঠ্য কার্যক্রম চলছে। অপর দিকে নিয়ম না মেনে একই বিদ্যালয়ের নামে সাইন বোর্ড টাঙিয়ে ছনকা বাজার সংলগ্ন ধলেশ^রী নদীর পশ্চিম পাড়ে তিন দিন আগে গড়েছেন টিন শেডের নতুন বিদ্যালয়। উভয় স্থানেই দেখা যায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অবস্থান। এ নিয়ে কয়েকদিন শুরু হয় উপজেলা অফিসে নানান অভিযোগ। এ প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসিল্যান্ড, সাটুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে সেনাবাহিনীর যৌথ নিরাপত্তায় তদন্তে আসেন।
ধলেশ্বরী নদীর পশ্চিম পাড়ে স্থানান্তরের নতুন নির্মিত বিদ্যালয়ে স্থানে তদন্তে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন স্থানে বিদ্যালয়টি রাতের আধাঁরে নির্মাণ করার বিষয়ে তিনি অবগত নন এবং এলাকাবাসী যেটা করেছে সেটা আইন মেনে হয়নি। পূর্বে যেখানে বিদ্যালয় নির্মিত ছিল সেটি নদী ভাঙনের কবলে বিধায় বিদ্যালয় স্থানান্তরের আদেশ পেয়েছি। তবে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের জন্য আইন মেনে নির্মান করা উচিৎ ছিল বলে তিনি তদন্তের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন।
ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব পাড়ে পূর্বে নির্মিত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, প্রথমে বিদ্যালয়টি নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল। আমাদের প্রস্তাবনায় ও চেষ্টায় বিদ্যালয়টি উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে অনুমোদিত হয়েছে চর অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করেই। নদী ভাঙন দেখিয়ে বিদ্যালয়ের যে স্থানান্তরের আদেশ যারা এনেছে মুলত ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে নদীতে কোন ভাঙন দেখা দেয়নি। নদীতে কোন বাড়ি বিলীন হয়নি। তাই চর অঞ্চরের শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিদ্যালয়টি আগে স্থানেই বহাল রাখার যৌক্তিক দাবী উপস্থান করেন তিনি।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, যেহেতু প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নিজেই জানেন না বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হয়েছে অপর দিকে নিয়ম মেনে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর হয়নি তারাই স্বীকার করেছেন। অপর দিকে আগের নির্মিত স্থানের পক্ষের দাবীও যৌক্তিক। তাই উভয় পক্ষ থেকে সাত জন করে প্রতিনিধিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে অফিসে ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।