ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘটনার ৮ মাস পার হলেও এখনো মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে হত দরিদ্র খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাউলের বস্তায় কালো কালিতে লিখা আছে “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ” স্লোগান। বিষয়টি অনেকে পতিত স্বৈরাচার সরকারের উন্নয়নের প্রচার অব্যাহত রয়েছে বলে ক্ষোপ প্রকাশ করছেন।
জানা যায়, সাটুরিয়া উপজেলা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৮জন ডিলার রয়েছেন। ওই সকল ডিলারদের কাছে ৫ হাজার ৯শত ৬৬ জন সুবিধা ভোগী আছেন এর মধ্যে বাতিলের আওতায় আছেন ১৬৫ জন। তাদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য ধরা হয়েছে ১৫টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি ওজনের চাউলের বস্তার মূল্য ৪৫০টাকা যা কেবল ওইসকল ডিলার কাছ থেকেই কার্ড ধারীরাই পাবে। প্রতিবস্তায় ওই স্লোগান থাকায় বিষয়টি নিয়ে সুবিধাভোগী, সাধারণ জনতা ও রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্বৈচারের পতন হয়েছে পাটের বস্তায় কেন এখনো প্রচারণা?
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শেখ হাসিনার নামসহ ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাউলের পাটের বস্তা আগের অবস্থাই বহাল রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আবু সাইদ (বিএসসি) বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণ ও ছাত্রজনতার আন্দোলনে দেশ থেকে বিদায় হয়েছে। তার কোন প্রকার অপকর্ম বা প্রচারণার চিহ্ন দেশে থাকুক তা আমরা চাই না। যেহেতু তাদের কর্মতৎপরতা বন্ধ হয়েছে তা যেন আর জাগ্রত না হয় তিনি এই কমনা ব্যপ্ত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস খান মজলিশ মাখন বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের নামে ওই চাউলের বস্তায় এখনো তার নাম স্লোগান থাকাটা অন্যায়। যারা এখনো ফ্যাসিবাদ সরকারের অদ্যরুপে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র নেতা মোঃ শিশির আহমেদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সাথে কথা হয়েছে। তবে চাউল প্যাকেটকৃত বস্তা পরিবর্তন না করে বিকল্প ভাবে সমাধনের জন্য প্রশাসনের সাথে পুনরায় কথা বলা হবে।
এ বিষয়ে ট্যাগ অফিসার অর্নিবাণ সরকার চালের বস্তায় শেখ হাসিনার স্লোগান থাকার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকারের স্লোগান কোন অবস্থাতেই আমাদের সমর্থন যোগ্য নয়। পূর্বের প্যাকেটজাত থাকার কারণে সরবরাহ হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা রাবেয়া খাতুন লিজা নয়া দিগন্তকে বলেন , যে সকল বস্তায় ওই স্লোগানটি আছে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ও ডিলারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে নামটি কালো কালি দিয়ে মুছে দেওয়ার জন্য কিন্তু এর ব্যতিক্রম হয়ে থাকলে বিষয়টির জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরবর্তীতে যাতে ওই একই ভুল না হয় সে বিষয়েও খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাকে বিশেষ ভাবে নির্দেশ দেওয়া হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।