মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় স্থানান্তর পুনঃতদন্ত করার নির্দেশ প্রদান করেছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়। সেই প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে পুনঃতদন্ত প্রতিবেদনের সিদ্ধান্ত মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আগের স্থানে স্থাপিত বিদ্যালয়েই শ্রেণী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করার পরও গত দুই দিন ধরে ওই প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক কেউ শ্রেণী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য উপস্থিত হয় নাই। এ নিয়ে অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। আগে নির্মিত স্থানে সোমবার (৫ মে) দুপুরে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে দূর্গম চর অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত গরীব অসহায় ১২৭জন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী অংশ গ্রহন করেন।
দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিম আক্তার বলেন, শিক্ষাই জাতির মৃত্যু দণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা গত সপ্তাহ থেকে বিদ্যালয়ের কক্ষে তালা থাকায় আঙিনায় স্থানীয় শিক্ষকদের দিয়ে শিক্ষা নিচ্ছি। এমপিও ভুক্ত শিক্ষক থাকতেও ইউএনও মহোদয় নির্দেশ দেওয়ার পরও দুই দিন হল কোন স্যারই আমাদের ক্লাস নিতে আসছেন না। আমরা কি ঝরে পরে যাব? আমাদের নদীর পূর্ব পাড়ের চরে বিদ্যালয় চরেই চাই, সুষ্ঠু ভাবে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে ভাল কিছু হতে চাই।
অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফাহিমা বলেন, শিক্ষকরা যদি আমাদের ক্লাস না নেন, না পড়ান আমরা কিভাবে পড়ালেখা করবো? পরীক্ষায় কি লিখবো? ছাত্র ছাত্রী আছে বিদ্যালয় আছে কিন্তু শিক্ষক নাই! আমরাও তো শিক্ষার্থী, আমাদের কথা তাঁরা কি ভাবেন না? আমাদের কে শিক্ষা দেবে? আমরা আমাদের মানসম্মত সেই শিক্ষকদের আমাদের আগের এই নির্মিত বিদ্যালয়েই চাই।
এ সময় সাবেক প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের লিখিত নির্দেশেও শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষকমণ্ডলীরা আসেন নাই বিধায় চর অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক, প্রতিষ্ঠাতা, সভাপতি তিনের সম্বনয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। এরা সুবিধা বঞ্চিত চর অঞ্চলের জন্য স্থাপিত বিদ্যালয়টিকে ধ্বংস করতে চায়। অপর দিকে তারা বাণিজ্যিক এলাকায় বিদ্যালয় স্থানান্তর করে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য চেষ্টা করছে বিধায় তাদের পদত্যাগের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামের সাথে মুঠো ফোনের একাধিক নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নাম্বারগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে সকল শিক্ষক নতুন স্থানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেছিল। বিদ্যালয়টি নিয়ে ৩০ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসরকারী মাধ্যমিক ১- শাখা থেকে পূর্বের স্থানান্তরের আদেশ বাতিলপূর্বক এবং শিক্ষা বঞ্চিত চরাঞ্চলের স্বার্থরক্ষার্থে পুররায় তদন্তের জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। তারপরও ক্লাসে ফিরছেন না শিক্ষকরা। ক্লাসে না আসলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।